ভোটার এলাকা পরিবর্তন করতে কতদিন সময় লাগে
ভোটার এলাকা পরিবর্তন করতে কতদিন সময় লাগে ভোটার আইডি কার্ড দেশের সকল নাগরিকের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ডকুমেন্ট। ভোটার আইডি কার্ড ছাড়া আপনি একটি দেশের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবেন।
অনেকে ভোটার এলাকা পরিবর্তন করতে চান বা স্থানান্তর করতে চান কিন্তু কিভাবে ভোটার এলাকা পরিবর্তন করবেন আজকে আমরা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে জানব।
অনেকেই আছেন আছে দৈনন্দিন প্রয়োজনীয়তার তাগিদে বিভিন্ন স্থানে বসবাস করে থাকেন। ফলে তাদের স্থায়ী ঠিকানায় ভোটার না হয় বর্তমান ঠিকানায় ভোটার হয়ে থাকেন। কিন্তু একটা সময় অবশ্যই তাদেরকে স্থায়ী ঠিকানায় ফিরে আসতেই হয়। তখনই ভোটার এলাকা পরিবর্তনের প্রয়োজন হয়।
আজকের মূল আলোচনা হলো ভোটার এলাকা পরিবর্তন করতে কত দিন সময় লাগে
জন্ম নিবন্ধন যাচাই অনলাইন চেক Apps
ভোটার এলাকা কেন পরিবর্তন করব?
বিভিন্ন কাজের প্রয়োজনে আমরা দেশের এক স্থান থেকে অন্য স্থানে চলে যায় বা স্থানান্তরিত হই।
এছাড়া অনেক সময় আমরা আমাদের স্থায়ী ঠিকানার পরিবর্তে বর্তমান ঠিকানায় ভোটার আইডি কার্ড তৈরি করি। পরে আমরা যখন আমাদের স্থায়ী ঠিকানায় ভোটার হতে চাই তখন সেটা পারি না। এই সমস্যা সমাধান করতে আপনাকে অবশ্যই আপনার ভোটার এলাকা পরিবর্তন করতে হবে।
ভোটার এলাকা পরিবর্তন করতে কতদিন সময় লাগে
ভোটার নিবন্ধন এর ২০/২৫ দিনপর আপনি আপনার মোবাইলে এনআইডির কপি পেয়ে যাবেন,তারাই আপনাকে পাঠিয়ে দিবে।তারপর হার্ডকপি আসতে একটু সময় লাগবে এবং সেটাও মোবাইল ম্যাসেজে জানিয়ে দিবে।আর মোবাইল থেকে প্রিন্টআউট করে কাজ চালিয়ে যেতে পারবেন।ধন্যবাদ।
ভোটার এলাকা কয় ভাবে পরিবর্তন করা যায়?
আপনি দুই ভাবে ভোটার এলাকা পরিবর্তন করতে পারবেন একটি হলো
- অনলাইনে এবং
- অপরটি হল নির্বাচন কমিশন অফিসের মাধ্যমে।
ভোটার এলাকা পরিবর্তন করতে কি কি লাগবে?
- বিদ্যুৎ বিলের কপি বা গ্যাস বিলের কপি বা টেলিফোন বিলের কপি |
- আপনার ইউনিয়নের অথবা কাউন্সিলর অফিস কর্তৃক নাগরিক সনদ ও প্রত্যয়ন পত্র।
- একটি সচল সঠিক মোবাইল নম্বর।
আপনার কাগজপত্রে যদি কোন সমস্যা থাকে তাহলে নির্বাচন কমিশন অফিস কর্তৃক আপনার থেকে এছাড়া আরো অনেক ধরনের ডকুমেন্ট চাইতে পারে। (যেমন: মা-বাবার আইডি কার্ড অথবা জন্ম নিবন্ধনের কপি, আপনার শিক্ষা সনদ, আপনার অনলাইন জন্ম নিবন্ধনের কপি ইত্যাদি)
জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধনের ক্ষেত্রে কত টাকা লাগে?
- আপনি যদি জাতীয় পরিচয়পত্রের প্রথম অংশ বা পার্সোনাল ইনফরমেশন গুলো পরিবর্তন করতে চান তাহলে প্রথমবার আবেদনের সময় ২৩০ টাকা, দ্বিতীয়বার ৩৪৫ টাকা এবং তারপর থেকে প্রতিবার আবেদনের জন্য ৫৭৫ টাকা ফি প্রদান করতে হবে।
- আপনি যদি জাতীয় পরিচয় পত্রের অদৃশ্য তথ্যগুলো পরিবর্তন করতে চান (যেমন: জন্ম নিবন্ধন নম্বর, পাসপোর্ট নম্বর ইত্যাদি) তাহলে প্রতিবার আপনাকে ১১৫ টাকা ফি প্রদান করতে হবে।
আপনারা চাইলে জাতীয় পরিচয়পত্রের প্রত্যেকটি ফি যে কোন মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে মাত্র এক মিনিটের মধ্যেই প্রদান করতে পারবেন। আগে এই ফি জমা হতে প্রায় ৩০ মিনিট সময় লেগে যেত, কিন্তু বর্তমানে আপনি ফ্রি প্রদানের সাথে সাথেই সেটা সার্ভারে এন্ট্রি হয়ে যায়। আপনি জাতীয় পরিচয় পত্রের টাকা জমা দেওয়া ছাড়া কোন তথ্য সংশোধন সাবমিট করতে পারবেন না।
অনলাইনের মাধ্যমে ভোটার এলাকা পরিবর্তন করার নিয়ম
অনলাইনের মাধ্যমে আপনি চাইলে কোন রকম ঝামেলা ছাড়াই ভোটার এলাকা পরিবর্তন করতে পারবেন। অনলাইনের মাধ্যমে ভোটার এলাকা পরিবর্তন করতে গেলে আপনাকে নির্বাচন কমিশন অফিসে যাওয়া লাগবে না।
১. অনলাইনের মাধ্যমে ভোটার এলাকা পরিবর্তন করতে গেলে প্রথমে আপনারা নির্বাচন কমিশন অফিসের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট এ (https://services.nidw.gov.bd/nid-pub/) চলে যান।
২. ওয়েব সাইটে যাওয়ার পরে আপনাকে আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র নম্বর এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করতে হবে। আপনার যদি একাউন্ট না থাকে তাহলে অবশ্যই আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র এর নাম্বার এবং জন্ম তারিখ ও অন্যান্য তথ্য দিয়ে প্রথমে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।
৩. একে পরিচয় পত্র নম্বর এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করার পরে আপনারা “বিস্তারিত প্রোফাইল” অপশন এ ক্লিক করুন।
৪. বিস্তারিত প্রোফাইলে যাওয়ার পরে উপরে ডান পাশে “এডিট” অপশনে ক্লিক করুন।
৫. এডিট অপশনে ক্লিক করার পরে আপনাকে একটি ওয়ার্নিং দেখাবে, সেটা উপরের দিকে স্ক্রল করে “বহাল” অপশনে ক্লিক করুন।
৬. তারপরে আপনি “অন্যান্য তথ্য” অপশনে ক্লিক করার পরে আপনি আপনার বর্তমান ঠিকানা স্থায়ী ঠিকানা থেকে শুরু করে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেখতে পাবেন।
৭. আপনি ভোটার এলাকা পরিবর্তন করার জন্য “স্থায়ী ঠিকানা”-র অপশনে গিয়ে আপনি যে বিষয়টি পরিবর্তন করতে চান সে বিষয়ে পাশে যে “টিক চিহ্ন” রয়েছে সেটাতে ক্লিক করুন।
৮. টিক চিহ্নতে ক্লিক করার পরে দেখবেন আপনি সেই বিষয়টি পরিবর্তন করার একটি বক্স পাবেন। আপনি এখন আপনার এলাকার ঠিকানা সঠিকভাবে পূরণ করুন।
৯. অবশ্যই আপনার তথ্যগুলো পূরণ করার সময় যে তথ্যগুলো লিখবেন সেগুলো অবশ্যই সঠিকভাবে লিখবেন। কারণ আপনি একবার তথ্য সাবমিট করলে পরবর্তীতে আর পরিবর্তন করতে পারবেন না। সঠিকভাবে পূরণ করার পরে উপরে সবুজ রঙের “পরবর্তী” অপশনে ক্লিক করুন।
১০. এখন আপনি যে তথ্যগুলো পরিবর্তন করেছেন সেগুলো আপনাকে প্রিভিউ দেখাবে। আপনার সকল তথ্য যদি সঠিক থাকে তাহলে “পরবর্তী” অপশনে ক্লিক করুন। আর যদি তথ্য গুলোর মধ্যে ভুল থাকে তাহলে আগের অপশন গিয়ে তথ্যগুলো আবার সংশোধন করে নিন।
১১. এখন আপনাকে পে করতে বলবে। আপনি যদি জাতীয় পরিচয় পত্র নতুন সংশোধন করেন তাহলে প্রথম অবস্থায় আপনাকে অন্যান্য তথ্য সংশোধনের ক্ষেত্রে ৩৪৫ টাকা পে করতে হবে। আপনি চাইলে যে কোন মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে অথবা ব্যাংক চালানোর মাধ্যমে জাতীয় পরিচয় পত্রের টাকা পরিশোধ করতে পারবেন। আমার রিকোয়ারমেন্ট থাকবে আপনি মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে জাতীয় পরিচয়পত্রের বিল পে করুন।
১২. পেমেন্ট করার আগ পর্যন্ত আপনি পরবর্তী অপশনে যেতে পারবেন না। তাই আগে অবশ্যই পেমেন্ট করুন তারপরে আপনি পরবর্তী অপশনে ক্লিক করুন।
১৩. এখন আপনাকে বিভিন্ন ধরনের কাগজপত্রের স্ক্যান কপি আপলোড করতে বলবে। আপনি যেহেতু ঠিকানা পরিবর্তন করেছেন তাই আপনার বিদ্যুৎ বিল, গ্যাস বিল, টেলিফোন বিল ইত্যাদির স্ক্যান কপে আপলোড করুন। আবেদন করার আগে অবশ্যই এসব কাগজপত্রের যেকোনো একটি স্ক্যান কপি যে কোন কম্পিউটার দোকান থেকে করে নিবেন।
১৪. তারপরে আপনাকে আপনি যে তথ্যগুলো পরিবর্তন করেছেন এবং যে ফাইলগুলো আপলোড করেছেন সেগুলো প্রিভিউ দেখাবে। আপনার সকল তথ্য যদি সঠিক থাকে তাহলে সাবমিট অপশন এ ক্লিক করুন।
সাবমিট অপশনে ক্লিক করার পরে আপনার একটি পিডিএফ ফাইল ডাউনলোড হবে সেটা সংরক্ষণ করুন। পিডিএফ ফাইলটি যদি অটোমেটিক ডাউনলোড না হয় তাহলে সাবমিট করার পরে আপনি আপনার বিস্তারিত প্রোফাইল অপশন এ গিয়ে উপরে ডান পাশে ডাউনলোড অপশন থেকেও ফাইলটি ডাউনলোড করে নিতে পারবেন।
নির্বাচন কমিশন অফিসের মাধ্যমে ভোটার এলাকা পরিবর্তন
আপনি চাইলে আপনার নিকটস্থ নির্বাচন কমিশন অফিসের মাধ্যমেও আপনার ভোটার এলাকা পরিবর্তন করে নিতে পারবেন। নির্বাচন কমিশন অফিসের মাধ্যমে ভোটার এলাকা পরিবর্তনের জন্য প্রথমে আপনি সরাসরি আপনার নিকটস্থ জেলা নির্বাচন কমিশন অফিসে চলে যান।
সেখানে যাওয়ার পরে তারা আপনাকে একটি ফর্ম দেবে এবং কি কি ডকুমেন্ট লাগবে সেটার একটি স্লিপ দিবে। আপনি সেই ফর্মটি অনলাইনের মতই সঠিক ভাবে সঠিক তথ্য দিয়ে পূরণ করুন।
ফর্মটি পূরণ করার সময় অবশ্যই কোন কাটা ছেঁড়া করতে যাবেন না। প্রয়োজন হলে অন্য মানুষকে দিয়ে ফর্মটি পূরণ করান। ফর্মটি পূরণ করার পরে আপনি আপনার প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট (যেমন: বিদ্যুৎ বিলের কপি বা গ্যাস বিলের কপি বা টেলিফোন বিলের কপি, আপনার এলাকার চেয়ারম্যান অথবা কাউন্সিলর কর্তৃক নাগরিক সনদ এবং প্রত্যয়ন পত্র ইত্যাদির ফটোকপি) সহকারে আপনার নিকটস্থ নির্বাচন কমিশন অফিসে জমা দিয়ে আসুন।
নির্বাচন কমিশন অফিসে ভোটার এলাকা পরিবর্তন করার জন্য কোন ফি’র প্রয়োজন হয় না। আপনি সম্পূর্ণ ফ্রিতেই আপনার ভোটার এলাকা পরিবর্তন করতে পারবেন।
আপনার ভোটার এলাকা পরিবর্তন হতে এক থেকে দুই মাস সময় লেগে যেতে পারে। এক থেকে দুই মাস পরে আপনার মোবাইল নম্বরে এসএমএস এর মাধ্যমে আপনার ভোটার এলাকা পরিবর্তনের তথ্য নিশ্চিত করা হবে।
এছাড়া আপনার ডকুমেন্টের মধ্যে যদি কোন সমস্যা থাকে তাহলে নির্বাচন কমিশন অফিস থেকে এসএমএস এর মাধ্যমে আপনার সাথে যোগাযোগ করা হবে। তাই আবেদনের সময় অবশ্যই সঠিক মোবাইল নম্বরটি দিবেন।
আশা করি বন্ধুরা এই পোষ্টের মাধ্যমে জাতীয় পরিচয়পত্রের ভোটার এলাকা পরিবর্তন এর সকল তথ্য বুঝতে পেরেছেন। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ।
[…] […]
[…] […]