ভোটার আইডি কার্ডের ঠিকানা পরিবর্তন করুন সহজেই

2

ভোটার আইডি কার্ডের ঠিকানা পরিবর্তন নিয়ে আমরা অনেক ঝামেলার সম্মুখীন হই। বিভিন্ন প্রয়োজনীয় অনেক সময় আমাদের ভোটার আইডি কার্ডের ঠিকানা পরিবর্তন করার প্রয়োজন হয়। ভোটার আইডি কার্ডের স্থান পরিবর্তন করার জন্য আমাদের কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে।

বিশেষ করে আমরা এক জায়গায় থেকে অন্য জায়গায় স্থান্তরিত হলে ভোটার আইডি কার্ডের স্থান বা ঠিকানা পরিবর্তন করার প্রয়োজন হয়। হয়তো যখন ভোটার আইডি কার্ডের জন্য আবেদন করেছি তখন অন্য জায়গায় ছিলাম এবং বর্তমানে স্থান পরিবর্তন করেছি সে ক্ষেত্রে আমরা চাইলে ভোটার আইডি কার্ডের ঠিকানা পরিবর্তন করে নিতে পারব।

আইডি কার্ডের ঠিকানা স্থানান্তর করার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

ভোটার আইডি কার্ডের ঠিকানা পরিবর্তন করার জন্য আমাদের কিছু ডকুমেন্টস প্রয়োজন হবে যেগুলো আবেদনের পূর্বে সংগ্রহ করে নিতে হবে। আমাদের প্রদত্ত তথ্যগুলো কতটুকু সত্য এটা প্রমাণের জন্য কিছু প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস সংগ্রহ করে নিতে হবে। ডকুমেন্টসগুলো হলোঃ

  • ভোটার আইডি কার্ড।
  • কমিশনার/ চেয়ারম্যান কর্তৃক প্রাপ্ত প্রত্যয়ন।
  • টেক্স এর রশিদ।
  • বিদ্যুৎ বিল/ গ্যাস বিল/ টেলিফোন বিল, ইউটিলিটি বিলের প্রমাণপত্র।
  • শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্র ( অপশনাল)
  • পিতা-মাতার ভোটার আইডি কার্ডের কপি (প্রয়োজন হতে পারে)
  • ১৭ ডিজিটের অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদের ফটোকপি।

ভোটার আইডি কার্ডের স্থান পরিবর্তন এর আগে অবশ্যই উপরে উল্লেখিত ডকুমেন্টস গুলো সংগ্রহ করে নিবেন।

ভোটার আইডি কার্ডের ঠিকানা পরিবর্তন

ভোটার আইডি কার্ডের ঠিকানা পরিবর্তন করার জন্য সর্বপ্রথম আপনার ভোটার আইডি কার্ডের স্থায়ী ঠিকানা পরিবর্তন করতে হবে এবং উক্ত ঠিকানা পরিবর্তনের জন্য নিকটস্থ নির্বাচন অফিসে দিয়ে আবেদন ফরমটি জমা দিতে পারবেন অথবা অনলাইনের মাধ্যমে ঠিকানা পরিবর্তনের জন্য আবেদন করতে পারবেন।

সাধারণত দুটি পদ্ধতিতে আপনারা ভোটার আইডি কার্ডের স্থান পরিবর্তন করতে পারবেন।

  1. সরাসরি নির্বাচন অফিসে গিয়ে।
  2. nidw এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটের মাধ্যমে।

নির্বাচন অফিস থেকে ভোটার আইডি কার্ডের ঠিকানা স্থানান্তর

নির্বাচন অফিস থেকে ভোটার আইডি কার্ডের ঠিকানা স্থানান্তর করার জন্য আপনাদের সংশোধনী ফর্ম – ১৩ পূরণ করতে হবে। ভোটার আইডি কার্ডের স্থায়ী ঠিকানা পরিবর্তন করতে হবে। স্থায়ী ঠিকানা পরিবর্তনের জন্য নূতন যেই ঠিকানায় স্থানান্তর করতে চাচ্ছেন উক্ত এলাকার নির্বাচন অফিসে যোগাযোগ করতে হবে।

ফর্ম – ১৩ ডাউনলোড করুন” এই লেখার উপরে ক্লিক করে ভোটার আইডি কার্ডের ঠিকানা পরিবর্তন ফরম ডাউনলোড করে নিতে হবে। এবারে প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো প্রদান করে এবং ডকুমেন্ট সংগ্রহ করে নির্বাচন অফিসে জমা দিতে হবে।

ফরমটি উপরের লিংক থেকে ডাউনলোড করে এটিকে প্রিন্ট করে যথাক্রমে সকল তথ্যগুলো প্রদান করতে হবেঃ

  • ব্যক্তির নাম
  • ভোটার আইডি কার্ড নাম্বার
  • পিতা ও মাতার নাম
  • জন্ম তারিখ (ভোটার আইডি কার্ড অথবা জন্ম নিবন্ধন সনদ অনুযায়ী)
  • নূতন স্থানান্তরিত এলাকার ঠিকানা
  • পূর্বের এলাকার ঠিকানা
  • ভোটার এলাকা পরিবর্তন করার যথোপযুক্ত কারণ
  • আবেদনকারীর স্বাক্ষর

যথাক্রমে সকল তথ্য গুলো প্রদান করতে হবে। এবং উক্ত তথ্যগুলো প্রদানের ক্ষেত্রে সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে যদি কোন তথ্যে ভুল হয় সেক্ষেত্রে কাটাকাটি না করে পুনরায় নতুন একটি ফরম ডাউনলোড করে পূরণ করবেন। অনলাইন থেকে ফরম ডাউনলোড করতে কোন ধরনের ফি প্রদান করতে হবে না।

এরপরে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র গুলো যথাক্রমে সংযুক্ত করে নির্বাচন অফিসে জমা দিতে হবে। ভোটার আইডি কার্ডের স্থান পরিবর্তন করার জন্য কি কি কাগজপত্র প্রয়োজন এসম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছিল, আপনাদের সুবিধার্তে পুনরায় উল্লেখ করা হলো।

ফরমের সাথে ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি, ইউটিলিটি বিল এর কপি, চেয়ারম্যান কিংবা মেম্বার কর্তৃক প্রাপ্ত সার্টিফিকেট, টেক্স অথবা কর রশিদ, শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট এগুলো সংযুক্ত করতে হবে। এবং প্রয়োজনের ক্ষেত্রে অনলাইন জন্ম নিবন্ধন ফটোকপি এবং পিতা-মাতার ভোটার আইডি কার্ডের কপি সংযুক্ত করার প্রয়োজন হতে পারে।

অনলাইনের মাধ্যমে এনআইডি কার্ডের ঠিকানা পরিবর্তন

অনলাইনের মাধ্যমে ভোটার আইডি কার্ডের ঠিকানা পরিবর্তন করার জন্য https://services.nidw.gov.bd/nid-pub/ এই ওয়েবসাইটটিতে প্রবেশ করুন। পূর্বে যদি একাউন্ট করা না থাকে তাহলে “রেজিস্টার করুন” বাটনে ক্লিক করে প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো প্রদান করে নতুন একাউন্ট রেজিস্টার করে নিবেন। অথবা পূর্বের একাউন্ট থাকলেই উজারনেম এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করে নিবেন।

  1. এরপরে আপনার প্রোফাইলে গিয়ে এডিট অপশনে ক্লিক করবেন।
  2. এখান থেকে শুধুমাত্র ব্যক্তিগত তথ্য এবং এডিট করতে পারবে।  প্রথমে “ঠিকানা” অপশনটি বাছাই করুন। (প্রথমে আপনি শুধুমাত্র বর্তমান ঠিকানা পরিবর্তন করতে পারবেন এবং স্থায়ী ঠিকানা পরিবর্তন করার জন্য নির্বাচন অফিসে যোগাযোগ করতে হবে)
  3. বর্তমান ঠিকানার উপরে টিক মার্ক করে আপনি যেগুলো পরিবর্তন করতে চান সেগুলো ঠিক করে দিবেন।
  4. সকল তথ্য উল্লেখ করে পুনরায় একবার চেক করে নিবেন এবং এরপরে “পরবর্তী” বাটনে ক্লিক করুন।
  5. এরপরে আপনাকে সংশোধনী ফি পরিশোধ করতে হবে। নতুন ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার ক্ষেত্রে ৩৪৫ টাকা যেকোনো মোবাইল ব্যাংকিং অথবা ব্যাংক চালান এর মাধ্যমে পরিশোধ করতে পারবেন। টাকা পরিশোধ করে “পরবর্তী” বাটনে ক্লিক করুন।
  6. পেমেন্ট সম্পন্ন হবার ৩০-৪০ মিনিট পরে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস গুলো স্ক্যান কপি আপলোড করতে হয়। (কি কি ডকুমেন্টস আপলোড করতে হবে এ সম্পর্কে উপরে আলোচনা করা হয়েছে)
    সবকিছু ঠিক থাকলে “সাবমিট” বাটনে ক্লিক করে আবেদনপত্রটি জমা দিন।
  7. আবেদন সম্পন্ন হওয়ার পরে আবেদনপত্রটি পিডিএফ ফাইল হিসেবে ডাউনলোড করে নিবেন। এখান থেকে ডাউনলোড করতে ত্রুটি হলে আপনার প্রোফাইল থেকে এটিকে ডাউনলোড করে নিতে পারবেন।
    অবশ্যই এই ডাউনলোড কপিটি সংগ্রহ করতে হবে। এই পদ্ধতিতে আপনারা অনলাইনের মাধ্যমে জাতীয় পরিচয় পত্রর ঠিকানা পরিবর্তন করতে পারবেন।

জাতীয় পরিচয় পত্রর ঠিকানা পরিবর্তনের আবেদন সাবমিট করার ২-৩ মাস পরে প্রদান করা মোবাইল নাম্বারে এসএমএস এর মাধ্যমে সঠিক স্ট্যাটাস জানিয়ে দেওয়া হবে। এছাড়াও আপনারা nidw এর ওয়েবসাইট থেকে আবেদন স্ট্যাটাস চেক করতে পারবেন।

নতুন স্মার্ট কার্ড কিভাবে হাতে পাবেন

ঠিকানা পরিবর্তন করার পরে সব থেকে জরুরি কাজ হলো নতুন ঠিকানায় স্মার্ট কার্ড সংগ্রহ। মূলত আপনি আপনার স্মার্ট কার্ডের ঠিকানা পরিবর্তন করেছে সেক্ষেত্রে শুধুমাত্র অনলাইন ডাটাবেজ থেকে এই ঠিকানা পরিবর্তন হয়েছে। আপনার হাতে থাকা স্মার্ট কার্ডটি পূর্বের ঠিকানায় রয়ে গেছে।

তাই পুনরায় আপনার স্মার্ট কার্ডটি আপডেট করে নিতে হবে। নতুন ঠিকানা অনুযায়ী স্মার্ট কার্ড নিতে হলে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী  ২৩০ টাকা ফি জমা দিয়ে এবং পুরনো স্মার্ট কার্ড জমা দিয়ে নতুন কার্ডের জন্য আবেদন করতে হবে। আবেদনের ২-৩ মাস পরে নতুন স্মার্ট কার্ডটি হাতে পাবেন।

ভোটার আইডি কার্ড নিয়ে কিছু তথ্য

Leave A Reply

Your email address will not be published.