মালয়েশিয়া ভিসা 2023 | মালয়েশিয়া ভিসা কবে খুলবে
প্রিয় পাঠক বৃন্দ এই লেখাটিতে মালয়েশিয়া ভিসা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। এবং মালয়েশিয়া ভিসা কবে খুলবে? মালয়েশিয়ায় যেতে কি কি প্রয়োজন হবে? এই সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানানো হবে।
যারা জীবিকা নির্বাহের জন্য বিদেশ ভ্রমণ করতে চান তাদের জন্য সুযোগপূর্ণ একটি দেশ হলো মালয়েশিয়া। বাংলাদেশের অনেক নাগরিক জীবিকা নির্বাহের জন্য মালয়েশিয়ায় কাজের সন্ধানে পাড়ি জমায়। তবে ৩ থেকে ৪ বছর বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় শ্রমিক নিয়োগ বন্ধ ছিল।
এই লেখাটিতে মালয়েশিয়া ভিসা সম্পর্কে আলোচনা করা হবে, আশা করি যারা মালয়েশিয়া ভ্রমণ করতে চান তাদের ক্ষেত্রে এই লেখাটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
মালয়েশিয়ার আজকের খবর(সর্বশেষ আপডেট)
মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রী ভি. শিবকুমার, স্থানীয় সময় শনিবার জানান পিকেপিপিএ এর আওতাধীন বিদেশি কর্মীদের ক্ষেত্রে কোঠার আবেদন অনুসারে ১৪ ই মার্চ পর্যন্ত আলাদা আলাদা সেক্টরের জন্য মোট ৯ লক্ষ ৯৫ হাজার ৩৯৬ জন কর্মীর কোঠা, মন্ত্রণালয় অনুমোদন দিয়েছে।
গত ৫ই মার্চ মালয়েশিয়ার মানব সম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন সেক্টরে মোট ৩,১৪,৪৭৩ জন কর্মী নিয়োগের কোটায় অনুমোদন দিয়েছেন। তিনি আরো জানিয়েছেন বিএমইটি থেকে মালয়েশিয়ায় যেতে ছাড়পত্র দেওয়া হবে ১ লক্ষ ৯ হাজার ৫০০ কর্মীকে।
মালয়েশিয়া ভিসা কবে খুলবে
আপনি যদি মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিয়ে থাকেন তাহলে এটা আপনার জন্য সুখবর। ইতিমধ্যে মালয়েশিয়ার ভিসা চালু হয়েছে। ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসের ১৯ তারিখ মালয়েশিয়ার ভিসা চালু করা হয়। এর আগে টানা ৩ বছর বাংলাদেশ থেকে বৈধ ও অবৈধভাবে কোন কর্মী মালয়েশিয়া প্রবেশ করতে পারত না।
বাংলাদেশ থেকে একটি সিন্ডিকেট অবৈধভাবে বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগ দিত, এরপরে আবার করোনার প্রভাবের ফলে মালয়েশিয়ার সরকার সিন্ডিকেটের কথা জানতে পারে, পরবর্তীতে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ থেকে সকল কর্মী নেওয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়।
২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে মালয়েশিয়ার সরকারের সাথে বাংলাদেশ সরকার চুক্তিবদ্ধ হয়ে, নতুন ঘোষণা দিয়ে বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় কর্মী নেওয়া চালু হয়। যারা ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় কাজের জন্য মালয়েশিয়া ভ্রমণ করতে চান তারা এখন মালয়েশিয়ার ভিসা ক্রয় করতে পারেন।
বিশেষ দ্রস্তব্বঃ কিছু দিন হোল কিছু সমস্যার কারনে মালােয়সিয়া শ্রমিক নেয়া বন্ধ রয়েছে।তারা জানিয়েছে পরবর্তী নোটিসয়ে জানিয়ে দেয়া হবে কবে থেকে লোক নেয়া হবে।
মালয়েশিয়ায় যেতে কি কি যোগ্যতা প্রয়োজন
সাধারণত ইউরোপের দেশগুলোতে ভ্রমণ করতে এসএসসি পাস প্রয়োজন হয় কিন্তু মালয়েশিয়ার সরকার ঘোষণা দিয়েছে মাত্র অষ্টম শ্রেণী পাস করলে মালয়েশিয়ায় ভ্রমণ করতে পারবে। অর্থাৎ বাংলাদেশে যারা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করেছেন, অষ্টম শ্রেণির পরীক্ষার সার্টিফিকেট আছে তারা চাইলে মালয়েশিয়া ভ্রমণ করতে পারেন।
এছাড়াও মালয়েশিয়ায় ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে ভ্রমণ করার জন্য অবশ্যই যে কাজের জন্য ভ্রমণ করবেন উক্ত কাজের উপর পরিপূর্ণ দক্ষতা থাকতে হবে এবং একটি দক্ষতার সার্টিফিকেট প্রয়োজন হবে। আর যা যা প্রয়োজন হবেঃ
- ন্যূনতম ১৮ মাস মেয়াদী একটি পাসপোর্ট।
- স্টুডেন্ট ভিসা অথবা টুরিস্ট ভিসার ক্ষেত্রে ২০ থেকে ২৩ বছর বয়স হতে হবে।
- ওয়ার্ক পারমিট ভিসার ক্ষেত্রে ন্যূনতম ২৭ বছর বয়স হতে হবে।
- আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয় পত্র এবং অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ।
- প্রয়োজনের ক্ষেত্রে নাগরিক সনদপত্র।
তবে আপনি মালেশিয়ায় যে কাজের জন্য ভ্রমণ করতে চাচ্ছেন উক্ত কাজের উপরে পরিপূর্ণ দক্ষতা অর্জন করতে হবে কেননা মালেশিয়ার সরকার ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য দক্ষ শ্রমিক নিয়োগ দিচ্ছেন।
মালয়েশিয়ার কি কি ভিসা পাওয়া যায়
২০২১ সালের পর থেকে বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ার ভিসা চালু হওয়ার পরে বর্তমানে প্রায় সকল মালয়েশিয়ার ভিসা পাওয়া যায়।
- মালয়েশিয়া ফ্যাক্টরি ভিসা
- মালয়েশিয়া ফ্রি ভিসা
- মালয়েশিয়া কৃষি ভিসা
- মালয়েশিয়া স্টুডেন্ট ভিসা।
- মালয়েশিয়াওয়ার্ক পারমিট ভিসা।
- বিজনেস ভিসা।
- মালয়েশিয়া টুরিস্ট ভিসা।
- মালয়েশিয়াকনস্ট্রাকশন ভিসা।
- এন্ট্রি ভিসা।
- মেডিকেল ভিসা।
- এমপ্লয়মেন্ট ভিসা।
মালয়েশিয়ার ভিসা পাওয়ার উপায়
যদি আপনার কোন আত্মীয়-স্বজন অলরেডি মালয়েশিয়া থাকে তাহলে খুব সহজেই তাদের মাধ্যমে ভিসা পেতে পারেন অথবা বাংলাদেশ মালয়েশিয়া দূতাবাসে যোগাযোগ করতে পারেন। এছাড়াও বর্তমানে অনেক ট্রাস্টেড কোম্পানি আছে যারা মালয়েশিয়ার ভিসা প্রদান করে।
বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে ভিসা প্রদানের ক্ষেত্রে অনেক প্রতারণার শিকার হতে হয়। বিশেষ করে যারা দালালের মাধ্যমে ভিসা সংগ্রহ করতে চান, দালাল কি টাকা দেয়ার পরে দালাল টাকা মেরে দেয় ভিসা দেয় না অথবা নকল ভিসা ধরিয়ে দেয়।
যদি আপনারা কোন দালালের মাধ্যমে ভিসা নিয়ে থাকেন তাহলে ভিসা হাতে পাওয়ার সাথে সাথে অনলাইন থেকে এটি যাচাই করবেন। অনলাইন থেকে মালয়েশিয়ার ভিসা যাচাই পদ্ধতি নিচে দেখানো হলো।
সরকারিভাবে মালয়েশিয়া যাওয়ার উপায়
সরকারিভাবে মালয়েশিয়া যেতে হলে আপনার নিকটস্থ জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিস অথবা আমি প্রবাসী অ্যাপস এর মাধ্যমে BMET Registration মালয়েশিয়া ভিসার জন্য আবেদন করতে পারেন। এছাড়া সরকারিভাবে মালয়েশিয়া যেতে আপনার তুলনামূলক অনেক খরচ কম হবে। এতে করে ঝামেলা থেকেও মুক্তি পাবেন।
পাসপোর্ট নাম্বার দিয়ে মালয়েশিয়া ভিসা চেক
মালয়েশিয়ার ভিসা চেক করার জন্য অবশ্যই পাসপোর্ট নাম্বার প্রয়োজন হবে। প্রথমে https://eservices.imi.gov.my/myimms/FomemaStatus এই ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে No Pasport এর জায়গায় আপনাদের পাসপোর্ট নাম্বার বসিয়ে দিন।
এরপরে Warganegara থেকে নাগরিকত্ব সিলেক্ট করুন। যেহেতু আমরা বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ার ভিসা চেক করার চাচ্ছি সেহেতু বাংলাদেশ সিলেক্ট করুন। এরপরে Carian বাটনে ক্লিক করে সার্চ করুন। এই ওয়েবসাইটের লেখাগুলো মূলত মালয়েশিয়ার ভাষায় দেখা যাচ্ছে।
তাই এখানে No Passport বলতে পাসপোর্ট নাম্বার, Warganegara দ্বারা নাগরিকত্ব, Carian দ্বারা Search বা খোঁজা বুঝিয়েছে। খুব সহজেই eservices.imi.gov ওয়েবসাইট থেকে পাসপোর্ট নাম্বার দিয়ে মালয়েশিয়া ভিসা চেক করতে পারবেন।
আরো পড়ুনঃ রোমানিয়া ভিসা চেক করার নিয়ম
মালয়েশিয়া যেতে কত টাকা লাগে
সরকারি নির্ধারিত ফি ছাড়াও মালয়েশিয়া ভ্রমণ করতে বারতি অল্প কিছু টাকা খরচ হয়। তবে যদি সরকারিভাবে মালয়েশিয়া ভ্রমণ করতে চান তাহলে ২ থেকে ৩ লক্ষ টাকা প্রয়োজন হতে পারে। ভিসা প্রসেসিং এর খরচ সঠিকভাবে বলা সম্ভব নয় এখানে শুধুমাত্র আনুমানিক ধারণা দেওয়া হয়েছে।
যদি কোন দালাল চক্রের মাধ্যমে ভিসা করিয়ে মালেশিয়া ভ্রমণ করতে চান তাহলে অনেক বেশি টাকা খরচ হতে পারে। আমি সাজেস্ট করব কোন দালাল চক্রের মাধ্যমে ভিসা না করিয়ে সরাসরি সরকারিভাবে মালয়েশিয়া ভ্রমণের চেষ্টা করার জন্য।
অনলাইনে মালয়েশিয়ার ভিসার আবেদন
বর্তমানে প্রায় সকল কাজই অনলাইনে করা সম্ভব ঠিক তেমনি অনলাইনের মাধ্যমে মালেশিয়ার ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন। অনেকেই বিভিন্ন দালাল চক্রের খপ্পরে পড়ে অনেক টাকা হারিয়ে ফেলেছেন। এখন থেকে এই সকল দালাল চক্র অ্যাভয়েড করে অনলাইনের মাধ্যমে নিজেরা মালয়েশিয়া ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন।
প্রথমে https://www.malaysiamyvisa.com/এই লিংকে ভিজিট করে প্রয়োজনীয় তথ্যাদি প্রদান করে অনলাইনে মালয়েশিয়ার ভিসার জন্য আবেদন করুন, এরপরে একটি অনলাইন আবেদন পাবেন এটিকে ডাউনলোড করে রাখবেন। পরবর্তীতে এই অনলাইন কপিটি ভিসা অফিসে জমা দিন।
মালয়েশিয়ায় কাজের বেতন কত টাকা
বাংলাদেশ থেকে যে সকল নাগরিক মালয়েশিয়ার ভ্রমণ করে তাদের মধ্যে বেশিরভাগ লোক জীবিকা নির্বাহের জন্য তথা কাজের জন্য মালয়েশিয়ার ভ্রমণ করে থাকে। অনেকেই অনলাইনে খুঁজছেন মালয়েশিয়ায় কাজের বেতন কত টাকা।
আসলে এটা নির্ধারিতভাবে বলা সম্ভব নয় কেননা প্রতিটি কাজের জন্য ভিন্ন ভিন্ন বেতন হয়ে থাকে। ভিসা আবেদন করার ক্ষেত্রে মালয়েশিয়ায় একটি কাজ নির্ধারণ করে নিবেন এবং যে সকল এজেন্সির মাধ্যমে মালয়েশিয়ায় ভ্রমণ করবেন তারা আপনাকে কাজ সম্পর্কে জানাবে।
তাদের কাছ থেকে কাজের বেতন সম্পর্কে জেনে নিতে পারবেন। তবে যদি আপনি মিডিয়াম লেভেলের কোন কাজের জন্য মালয়েশিয়া ভ্রমণ করেন তাহলে বাংলাদেশী টাকায় কমপক্ষে ৩০ থেকে ৭০ হাজার টাকার মতো বেতন পাবেন।