কুয়েত ভিসা ২০২৩ | কুয়েত কোম্পানি ভিসা বেতন কত

1

বর্তমানে উন্নত দেশগুলোর মধ্যে কুয়েত অন্যতম। প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে অনেক নাগরিক পারিবারিক চাহিদা মেটানোর জন্য কুয়েতে অবস্থান করে। এই লেখাটিতে কুয়েত ভিসা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।

সম্প্রতি সময়ে যারা কুয়েতে ভ্রমণ করার চাচ্ছেন তাদের জন্য এই লেখাটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কুয়েতে ভ্রমণ করার আগে কিভাবে ভিসার জন্য আবেদন করবেন এবং বর্তমানে কি কি ভিসা চালু আছে ও বর্তমানে কুয়েতের কোন কাজের চাহিদা বেশি রয়েছে এই সম্পর্কে বিস্তারিত জানা প্রয়োজন।

কুয়েত ভিসা নিউজ ২০২৩

কুয়েতের ভিসা চালু হতে যাচ্ছে নতুন নিয়ম, গতবছর তথা ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে জানানো হয়েছে মধ্যপ্রাচ্যে তথা কুয়েতে ভ্রমণ করা সকল প্রবাসীদের ভিসা ইস্যু করানোর পূর্বে তাদের দক্ষতা যাচাই করে ভিসা পারমিট দেওয়া হবে।

এমনটা জানিয়েছেন কুয়েতের রম ও জনশক্তি মন্ত্রণালয়। বর্তমানে কুয়েতের সরকার চাচ্ছে বাংলাদেশ থেকে সকল দক্ষ জনবল নিয়োগ দেওয়ার। এছাড়াও বর্তমানে যারা কুয়েতে অবস্থান করছে তাদের ক্ষেত্রে ওয়ার্ক পারমিট নবায়ন ও প্রদান করার ক্ষেত্রে শর্ত হিসেবে সকল কর্মীদের একটি দক্ষতা যাচাই পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে।

এবং এই পরীক্ষার মাধ্যমে তাদের দক্ষতার স্তর যাচাই করা হবে। কেএসই দ্বারা প্রথম পর্যায়ে এই পরীক্ষাগুলো হবে এবং যারা ওয়ার্ক পারমিট বা আকামা গুলো নবায়ন করতে চান তাদের ক্ষেত্রে এই নিয়ম বহাল থাকবে। এই ছিল কুয়েত ভিসা সম্পর্কিত সর্বশেষ আপডেট।

কুয়েতের কি কি ভিসা পাওয়া যায়

কাজের পাশাপাশি কুয়েতে অনেক বাংলাদেশী পর্যটক বেড়াতে যায়। কেননা পশ্চিম এশিয়ার এই দেশটিতে রয়েছে চমৎকার কিছু পর্যটন কেন্দ্র। দেশটির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিবছর অনেক বাংলাদেশী নাগরিক কুয়েতে পাড়ি জমায়।

এছাড়াও শিক্ষা ব্যবস্থার দিক থেকে এই দেশটি অনেক উন্নত, তাই বাংলাদেশী নাগরিকরা স্টুডেন্ট ভিসায় পড়ালেখার উদ্দেশ্যে কুয়েত ভ্রমণ করতে পারবে। চলুন জেনে নেই বর্তমানে কুয়েতের কি কি ভিসা পাওয়া যায়ঃ

  • পর্যটন বা ট্যুরিস্ট ভিসা।
  • ওয়ার্ক পারমিট ভিসা তথা কাজের ভিসা।
  • আবাসিক ভিসা।
  • ট্রানজিট ভিসা।
  • স্টুডেন্ট ভিসা।
  • বিজনেস ভিসা।
  • ফ্যামিলি ভিসা।
  • মেডিকেল ভিসা।
  • ড্রাইভিং ভিসা।

কুয়েত যেতে বয়স কত লাগে

সরকারি ও বেসরকারিভাবে কুয়েত যেতে  ব্যক্তির বয়স সর্বনিম্ন ২১ বছর  হতে হবে। আপনি যখন পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করবেন তখন আপনার পাসপোর্টে সর্বনিম্ন ২১ বছর বয়স দেখাতে হবে। পাসপোর্টে আপনার বয়স ২১ বছরের নিচে হলে আপনি কোনভাবেই কুয়েতে প্রবেশ করতে পারবেন না।

কুয়েত ভিসা আবেদন করার নিয়ম

কুয়েতের ভিসা পাওয়ার জন্য https://www.visa.gov.bd/ ওয়েবসাইট থেকে অনলাইনে আবেদন করতে পারেন। প্রথমে উপরের লিংকে ক্লিক করে অনলাইনে ফরম পূরণ করতে হবে। ফরম পূরণের সময় পেমেন্ট অপশনটি স্কিপ করুন।

এরপরে ছয় নাম্বার সেকশন থেকে এফএম ট্যাটি নির্বাচন করুন। প্রয়োজনীয় তথ্য পূরণ করে আবেদন ফরমটি জমা করুন এবং ফর্মটি জমা হওয়ার পরে আবেদন পত্রটি প্রিন্ট করুন। এরপরে এই প্রিন্ট কপিটি কুয়েত দূতাবাসে কনসিলার বিভাগে জমা দিন।

আবেদনপত্র প্রিন্ট কপি জমা দেওয়ার সময় প্রয়োজনীয় কাগজপত্র গুলো জমা দিতে হবে। অনলাইনের মাধ্যমে কুয়েত ভিসা পাবার জন্য আবেদন না করে সরাসরি দূতাবাসে যোগাযোগ করতে পারেন, অথবা বর্তমানে বাংলাদেশে অনেক এজেন্সি আছে যারা কুয়েত ভিসা প্রদান করে তাদের কাছ থেকে ভিসা নিতে পারেন।

কুয়েত ভিসা আবেদন করার জন্য যা যা প্রয়োজন

আবেদনের সময় অবশ্যই আবেদনকারীর পাসপোর্ট সাইজের সদ্য তোলা রঙিন ছবি এবং ব্যক্তির ভোটার আইডি কার্ড, জন্ম নিবন্ধন সনদ। ব্যক্তির নাগরিক সনদপত্র, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট এবং করোনাভাইরাস পরীক্ষার সার্টিফিকেট।

এই ডকুমেন্টসগুলো অনলাইন আবেদন শেষে ডাউনলোডকৃত আবেদনপত্রের সাথে সংযুক্ত করে বাংলাদেশ কুয়েত দূতাবাসের কনসিলার বিভাগে জমা করতে হবে। পরবর্তীতে এখান থেকে আপনাকে আপডেট জানানো হবে।

বাংলাদেশ থেকে কুয়েত যেতে কত টাকা লাগে

অনেকের মনে প্রশ্ন বাংলাদেশ থেকে কুয়েত যাতায়াতের ভিসা মূল্য কত টাকা? সাধারণত যদি কোন এজেন্সির মাধ্যমে আপনারা ভ্রমণ করতে চান তাহলে এই ভিসা পেতে কমপক্ষে ৬ থেকে ৭ লক্ষ টাকা খরচ হতে পারে। কুয়েত ভিসার দাম ভিসার কোয়ালিটি অনুযায়ী আলাদা হবে।

এছাড়াও যারা সরকারিভাবে কুয়েত ভ্রমণ করবে তাদের ক্ষেত্রে এই খরচ অনেকটা কম। যদি দালালের মাধ্যমে কুয়েত ভ্রমণ করার চান তাহলে এর থেকে বেশি অর্থ খরচ হতে পারে, বাংলাদেশে অনেক অসাধু দালাল চক্র আছে যারা টাকা নিয়ে পরবর্তীতে ভুল ভিসা প্রদান করে।

তাই ভিসা হাতে পাওয়ার পরে এটিকে যাচাই-বাছাই করে নিবেন। আর যথা সম্ভব দালাল চক্রের মাধ্যমে কুয়েত ভ্রমণ না করাই শ্রেয়।

কুয়েত কোন কাজের চাহিদা বেশি

কুয়েত বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর মধ্যে একটি। কুয়েতে প্রায় সব ধরনের কাজের চাহিদা রয়েছে।  বর্তমানে বিশ্বের সবচাইতে দামি মুদ্রা হল কুয়েতের দিনার। কুয়েতে যেসব কাজের চাহিদা রয়েছে। যেমন

  •  ড্রাইভিং
  •  ক্লিনার
  •  কনস্ট্রাকশন
  •  ইলেক্ট্রিশিয়ান
  •  হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্ট

এছাড়াও কুয়েতে অনেক ধরনের কাজ রয়েছে । এসব কাজ থেকে আপনি যেকোনো একটি কাজের উপরে দক্ষতা অর্জন করে  কুয়েত ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে যেতে পারবেন।

পাসপোর্ট নাম্বার দিয়ে কুয়েত ভিসা চেক

পাসপোর্ট নাম্বার দিয়ে অনলাইনে কুয়েত ভিসা যাচাই করার জন্য প্রথমে https://rnt.moi.gov.kw/esrv/VisaStat.do?lang=eng#mobSec এই ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন, এরপরে ভিসা এপ্লিকেশন নাম্বার ও ক্যাপচা কোড পূরণ করে সাবমিট (SUBMIT) বাটনে ক্লিক করুন।

কুয়েত ভিসা ২০২৩ | কুয়েত কোম্পানি ভিসা বেতন কত

এরপরে আপনাদের কুয়েত ভিসা স্ট্যাটাস দেখা যাবে। তাই কুয়েতের ভিসা হাতে পাওয়ার সাথে সাথে মোবাইল থেকে এই ওয়েবসাইটে ভিজিট করে শুধুমাত্র পাসপোর্ট নাম্বার দিয়ে ভিসা যাচাই করে নিবেন। তাহলে প্রতারণার শিকার হওয়ার সম্ভাবনা নেই।

এছাড়া বিভিন্ন দেশের ভিসা চেক করার জন্য এই আর্টিকেলটি পরুনঃ সকল দেশের ভিসা চেক

কুয়েত ভিসা পাওয়ার জন্য কি কি প্রয়োজন

কুয়েতের ভিসা পাওয়ার জন্য যা প্রয়োজন হবে সেগুলো নিচে উল্লেখ করা হলোঃ

  • বৈধ পাসপোর্ট এর সাথে পাসপোর্ট এর মধ্যে অবশ্যই ২টি ফাঁকা পেজ থাকতে হবে।
  • কমপক্ষে ছয় মাস পাসপোর্ট এর মেয়াদ থাকতে হবে।
  • কয়েক কপি রঙিন সদ্য তোলা ছবি, ছবিগুলো অবশ্যই সাদা ব্যাকগ্রাউন্ডে হতে হবে।
  • পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট থাকতে হবে।
  • পৌরসভা কর্তৃক প্রাপ্ত নাগরিক সনদপত্র থাকতে হবে।
  • করোনা টেস্টের মেডিকেল রিপোর্ট থাকতে হবে।
  • একটি সচল ব্যাংক একাউন্ট থাকতে হবে।
  • আবেদনকারী ব্যক্তি জাতীয় পরিচয় পত্র বা ভোটার আইডি কার্ড প্রয়োজন হতে পারে।
  • প্রয়োজনের ক্ষেত্রে কর্মদক্ষতা যাচাই সার্টিফিকেট প্রয়োজন হতে পারে।
  • অনলাইনে আবেদন শেষে আবেদন পত্রের প্রিন্ট কপি দূতাবাসে জমা দিতে হবে।

এর বাহিরেও যদি কোন ডকুমেন্টস প্রয়োজন হয় তা আবেদন পত্রের প্রিন্ট কপি দূতাবাসের জমা দেওয়ার পরে ওখান থেকে জানিয়ে দেওয়া হবে।

কুয়েত ফ্রি ভিসা পাওয়ার উপায়

কুয়েতের ফ্রি ভিসা পাওয়ার জন্য মূলত ভিসা প্রদানকারী এজেন্সি গুলোর সাথে যোগাযোগ রাখতে হবে। বিভিন্ন সময়ে কুয়েতের বড় বড় কোম্পানিগুলো দক্ষ এমপ্লয়ী নিয়োগ দেয় এবং তারা কোম্পানির পক্ষ থেকে ফ্রি ভিসা প্রদান করে থাকে।

কুয়েতের বড় বড় কোম্পানিগুলো বাংলাদেশী ভিসা এজেন্সির সাথে যোগাযোগ করে এবং তাদের কাছে দক্ষ জনবল চায়। কখন বাংলাদেশী ভিসা এজেন্সি গুলো তাদের সাথে একটি চুক্তি করে, কুয়েতে ফ্রি ভিসার ভ্রমণ করার জন্য কমপক্ষে ১ লক্ষ টাকা খরচ হতে পারে।

সাধারণত কুয়েতের বড় বড় কোম্পানিগুলো তাদের বিভিন্ন সেক্টরে যেমন: ড্রাইভার, ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার, কন্সট্রাকশন এর কাজ করানোর জন্য বাংলাদেশ থেকে জনবল নিয়োগ দেয়। এদের ক্ষেত্রে কোম্পানির পক্ষ থেকে ভিসা প্রদান করে দক্ষ লোকদের কুয়েত নিয়ে যায়।

কুয়েতে সর্বনিম্ন বেতন কত| কুয়েত ভিসার বেতন কত?

কুয়েতের সর্বনিম্ন বেতন নিয়ে বিভিন্ন মতামত রয়েছে। তবে বেতন স্কেল সম্পূর্ণ নির্ভর করে আপনার চাকরির উপরে। আপনি যত উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা হিসেবে কোন কোম্পানিতে চাকরি করবেন তত বেশি বেতন পাবেন।

মতামত কুয়েতি দিনার বাংলাদেশী টাকা
৬০ ২০,০০০
৭৫ ২৬,০০০
৮০ ২৮,০০০

কুয়েতের সর্বনিম্ন বেতন সম্পর্কে বিভিন্ন মতামত পাওয়া যায়। আপনি যেই এজেন্সির মাধ্যমিক কুয়েত ভ্রমণ করবেন সর্বপ্রথম তাদের কাছ থেকে আপনার কাজের বেতন সম্পর্কে জেনে নিবেন।

কুয়েত কোম্পানি ভিসা বেতন কত

আপনি যদি কুয়েতে কোম্পানির ভিসা নিয়ে যেতে চান তাহলে  কোম্পানির কাজে কত টাকা বেতন সেটা জানা দরকার। কুয়েত কোম্পানি অথবা ফ্যাক্টরি ভিসার  ৫০০০০-১০০০০০  টাকার মত বেতন  পেতে পারেন।  তবে আপনি যেই কাজের জন্য কোম্পানি ভিসা নিয়ে যেতে চান সেই কাজের প্রতি দক্ষতা অর্জন করে আপনি এর চেয়েও বেশি বেতনে কাজ পেতে পারেন।

কুয়েত ড্রাইভিং ভিসা বেতন কত

কুয়েত ড্রাইভিং ভিসা নিয়ে সে দেশে প্রবেশ করার আগে বেতন কত সেটি জানা প্রয়োজন।  বর্তমানে কুয়েতের টাকার মান বিশ্বের সবচেয়ে বেশি। তাই এরই পরিপ্রেক্ষিতে অন্যান্য দেশের তুলনায় কুয়েতে ড্রাইভিং ভিসার বেতন তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি।  ড্রাইভিং ভিসার বেতন ৪০০০০-৮০০০০  টাকা।  তবে আপনার কাজের দক্ষতা অনুযায়ী বেতন অনেক সময় এর কম বেশিও হতে পারে।

কুয়েত ক্লিনার ভিসার বেতন কত

বাংলাদেশ থেকে যারা কুয়েত ক্লিনার ভিসা নিয়ে যেতে চান তাদের বেতন আনুমানিক ৩৫০০০-৪০০০০ টাকা  হয়ে থাকে। তবে ক্ষেত্র বিশেষে এই বেতন কিছুটা কম বেশি হওয়াটাই স্বাভাবিক।

বাংলাদেশের কুয়েত দূতাবাস কোথায় অবস্থিত

বাংলাদেশে কুয়েত দূতাবাসের ঠিকানাঃ হাউস নং #০৫, রোড নং #৮০, গুলশান ২ ঢাকা, বাংলাদেশ। এবং টেলিফোন নাম্বারঃ +88 02- 488 112 40- 3  ও ফ্যাক্স নাম্বারঃ +88 02- 588 152 57 কুয়েত দূতাবাসের ইমেইল এড্রেসঃ Kuwait_embd@yahoo.comcom, এই দূতাবাসে সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সেবা প্রদান করা হয়।

বাংলাদেশের কুয়েত দূতাবাস ঢাকা গুলশান ২ এর ৮০ নাম্বার রোডের ৫ নং হাউসে অবস্থিত। সরাসরি বাংলাদেশ দূতাবাসের সাথে টেলিফোন নাম্বারে যোগাযোগ করতে পারেন। টেলিফোন নাম্বারঃ +৮৮ ০২- ৪৮৮ ১১২ ৪০- ৩

ভিসা নিয়ে আরো কিছু তথ্য

 

1 Comment
  1. […] কুয়েত ভিসা ২০২৩ | কুয়েত কোম্পানি ভিস… […]

Leave A Reply

Your email address will not be published.