অস্ট্রেলিয়া কাজের ভিসা ২০২৩ | অস্ট্রেলিয়া ভিসা আবেদন
বর্তমানে অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার জন্য শুধুমাত্র কাজের ভিসা, স্টুডেন্ট ভিসা ও টুরিস্ট ভিসা চালু আছে। এই লেখাটিতে অস্ট্রেলিয়া কাজের ভিসা ২০২৩ সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরা হবে। কিভাবে আপনি অস্ট্রেলিয়ায় কাজ খুঁজে পাবেন সে সম্পর্কে জানুন।
অনেক বাংলাদেশী নাগরিক জীবিকা নির্বাহের জন্য বিভিন্ন দেশে কাজের উদ্দেশ্যে ভ্রমণ করে। অস্ট্রেলিয়া সরকার বাংলাদেশের নাগরিকদের দিচ্ছেন কাজ করার সুযোগ। আপনারা চাইলে অস্ট্রেলিয়ার ওয়ার্ক পারমিট ভিসা তথা কাজের ভিসা নিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় ভ্রমণ করতে পারেন।
তবে ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য আবেদন করার পূর্বে অবশ্যই আপনাকে অস্ট্রেলিয়ায় কি কি জব আছে এ সম্পর্কে অবগত হতে হবে। এই লেখাটি তে আপনাদের সুবিধার্থে অস্ট্রেলিয়ার কাজের ভিসা সম্পর্কে সকল তথ্য তুলে ধরা হবে।
অস্ট্রেলিয়া কাজের ভিসা আপডেট ২০২৩
এক তথ্যসূত্রের মাধ্যমে জানা গিয়েছে বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ায় সরকারিভাবে কোন লোক নেয়া হচ্ছে না, কিন্তু বেসরকারিভাবে অস্ট্রেলিয়ায় কাজের জন্য ভ্রমণের ক্ষেত্রে অনেকগুলো কাজ ফাঁকা আছে। যেমনঃ ড্রাইভার, ক্লিনার, ভার্টিকালচার, ইলেকট্রনিক্স, মেকানিক্যাল, গবাদি পশু পালন, কৃষিকাজ, লেবার, হোটেল, কন্সট্রাকশন, সেফ, কোয়ালিটি ম্যানেজার এবং ফুড প্যাকেজিং ইত্যাদি।
কিভাবে খুব সহজে আপনারা অস্ট্রেলিয়ায় কাজ খুঁজবেন বাংলাদেশে বসে সেই সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হবে। করোনাকালীন সময়ের পরে অস্ট্রেলিয়ার সরকার জানিয়েছিল প্রতিবছর অস্ট্রেলিয়ায় ১ লক্ষ ৯৫ হাজার অভিবাসী নিবে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর অস্ট্রেলিয়ার অনেক কর্মী নিয়োগ দিচ্ছে।
সরকারিভাবে অস্ট্রেলিয়ায় কাজের ভিসার ভ্রমণ
অন্যান্য দেশের মতো অস্ট্রেলিয়ার সরকারিভাবে কাজের জন্য ভিসা প্রদান করা হয়। সরকারি ভিসায় মূলত অস্ট্রেলিয়ায় আপনি কাজের জন্য অথবা পড়ালেখার জন্য যেতে পারবেন। তবে সরকারি ভিসায় অস্ট্রেলিয়া ভ্রমণের জন্য অবশ্যই পরিপূর্ণ দক্ষতা অর্জন করতে হবে।
মনে করেন আপনি সরকারি ভিসায় অস্ট্রেলিয়া কাজের জন্য ভ্রমণ করতে চাচ্ছেন সেক্ষেত্রে আপনি যে কাজের জন্য অস্ট্রেলিয়া ভ্রমণ করবেন উক্ত কাজের উপরে পরিপূর্ণভাবে পারদর্শী হতে হবে। সরকারিভাবে অস্ট্রেলিয়া ভ্রমণের ক্ষেত্রে খরচ অনেক কম এবং বাড়তি অনেক সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যাবে।
অস্ট্রেলিয়ায় কাজের ভিসার খরচ
অস্ট্রেলিয়ায় কাজের ভিসার খরচ বাংলাদেশী মুদ্রায় প্রায় ৫ থেকে ৭ লক্ষ টাকা। তবে আপনি যদি সরকারিভাবে অস্ট্রেলিয়ার ভ্রমণ করেন সেক্ষেত্রে ভিসার খরচ অনেকটা কমে যাবে। যদি দালালের মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়ার কাজের ভিসা পেতে চান সেক্ষেত্রে কত খরচ হবে এটা নির্ধারিতভাবে বলা সম্ভব নয়।
কেননা দালালের মাধ্যমে অনেক বেশি খরচ হয়। এবং যদি কুচক্রী দালালের খপ্পরে পড়েন সেক্ষেত্রে সব টাকা হাতিয়ে নেওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই যদি আপনারা অনলাইন বিষয়ক পারদর্শী হন সেক্ষেত্রে সরাসরি নিজে অনলাইনে কাজের ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন।
অস্ট্রেলিয়ায় কাজের ভিসা নিয়ে ভ্রমণ করার জন্য কত টাকা খরচ হবে তা সঠিকভাবে বলা সম্ভব নয়, তবে আনুমানিকভাবে বাংলাদেশী মুদ্রায় প্রায় ৫ থেকে ৭ লক্ষ টাকা খরচ হতে পারে।
আরো দেখুনঃ ইতালি ভিসা খরচ ২০২৩
অস্ট্রেলিয়া ভিসা আবেদন
অস্ট্রেলিয়ায় কাজের জন্য ভ্রমণ করতে অবশ্যই ওয়ার্ক পারমিট ভিসা/ কাজের ভিসার প্রয়োজন। অস্ট্রেলিয়ার কাজের ভিসা পাবার জন্য সরাসরি অস্ট্রেলিয়া দূতাবাসে গিয়ে যোগাযোগ করতে পারেন। অথবা Working in Australia ওয়েবসাইটে ভিজিট করে, অস্ট্রেলিয়ায় কাজ খোঁজা সহজ যাবতীয় কার্যক্রম সম্পাদন করতে পারেন।
অস্ট্রেলিয়ার এই ওয়ার্কিং ওয়েবসাইটে নজর রাখলে আপনারা অস্ট্রেলিয়ায় কাজের লোক নেয়ার বিজ্ঞপ্তি গুলোর সম্পর্কে জানতে পারবেন, এবং বিজ্ঞপ্তি গুলো দেখার পরে আপনি যদি উক্ত কাজের জন্য পারফেক্ট হন এক্ষেত্রে কাজের ভিসার জন্য আবেদন করবেন।
উক্ত ওয়েবসাইটে ভিজিট করলে অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন ধরনের কাজ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। অথবা টেম্পোরারি ওয়ার্ক ভিসাতে খুব সহজেই অস্ট্রেলিয়া ভ্রমণ করতে পারবেন। তবে ভিসার জন্য আবেদন করার পূর্বে অবশ্যই ভালো একটি জব খুঁজে নিবেন।
অস্ট্রেলিয়ায় কাজের ভিসা প্রসেসিং
অস্ট্রেলিয়ার ওয়ার্ক পারমিট ভিসা অর্থাৎ কাজের ভিসা প্রসেসিং করার জন্য কোন এজেন্সির সহযোগিতা নিতে পারেন অথবা আপনি অনলাইন বিষয়ক পারদর্শী হলে নিজে থেকে অনলাইনে কাজের ভিসা প্রসেসিং করতে পারেন।
অনলাইনে অস্ট্রেলিয়ার কাজের ভিসা প্রসেসিং করার জন্য আপনার কিছু গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্টস প্রয়োজন হবে, উক্ত ডকুমেন্টসগুলো ছাড়া কখনোই অস্ট্রেলিয়ার কাজের ভিসা প্রসেসিং সম্ভব নয়। ডকুমেন্টস গুলোর মধ্যে আপনার এনআইডি কার্ড, মেডিকেল রিপোর্ট, পাসপোর্ট কপি, যোগ্যতার সার্টিফিকেট ইত্যাদি।
অস্ট্রেলিয়ায় কাজের ভিসার জন্য কি কি ডকুমেন্টস প্রয়োজন হয়
অস্ট্রেলিয়ায় কাজের ভিসার জন্য আবেদন করতে অবশ্যই আপনাকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট সংগ্রহ করে নিতে হবে। যেমনঃ
- আবেদনকারীর পাসপোর্ট এর মেয়াদ অবশ্যই ৬ মাসের বেশি থাকতে হবে।
- আবেদনকারীর এনআইডি কার্ড।
- আবেদনকারীর জন্ম নিবন্ধন সনদ প্রয়োজন হতে পারে (বিশেষ ক্ষেত্রে)
- পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট।
- যেই কাজের জন্য অস্ট্রেলিয়ায় ভ্রমণ করতে চাচ্ছেন উক্ত কাজ সম্পর্কে আপনার অভিজ্ঞতা সার্টিফিকেট।
- করোনা টিকা কার্ড এবং মেডিকেল রিপোর্ট।
এছাড়াও প্রয়োজনের ক্ষেত্রে অন্যান্য ডকুমেন্ট দরকার হতে পারে। তবে সাধারণভাবে অস্ট্রেলিয়ায় কাজের ভিসার জন্য আবেদন করতে উক্ত ডকুমেন্টগুলো অবশ্যই প্রয়োজন।
অস্ট্রেলিয়ায় কাজ খোঁজার সহজ উপায়
আমরা পূর্বেই আলোচনা করেছি অস্ট্রেলিয়ায় কাজ পাওয়ার জন্য সবথেকে সহজ উপায় হল working in australia ওয়েবসাইটে নজর রাখা। এই ওয়েবসাইটে সাধারণত অস্ট্রেলিয়ার কাজ সম্পর্কে বিভিন্ন সময় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়।
এছাড়াও আরো কয়েকটি ওয়েবসাইট আছে যেখানে অস্ট্রেলিয়ার চলতি জব অফার গুলো সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয় তার মধ্যে: https://www.seek.com.au/ এবং https://www.y-axis.com/visa/work/australia/ অন্যতম।
এই ওয়েবসাইটগুলো অস্ট্রেলিয়া কাজ সম্পর্কে বিভিন্ন ধরনের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। যখন ওয়েবসাইটগুলো ওয়ার্ক পারমিট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে তখন আপনি যদি ওই কাজের জন্য যোগ্যবান হন সেক্ষেত্রে আবেদন করতে পারবেন।
আরো দেখুনঃ রোমানিয়া ভিসা | রোমানিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা
অস্ট্রেলিয়া কাজের ভিসা পাওয়ার সহজ উপায়
অস্ট্রেলিয়ায় কাজের ভিসা পাওয়ার জন্য আপনারা বিভিন্ন ধরনের এজেন্সির সহযোগিতা নিতে পারেন, বাংলাদেশে অনেক এজেন্সি আছে যারা আপনার যোগ্যতা অনুযায়ী বিভিন্ন দেশে কাজ খুঁজে দেবে এবং ভিসার জন্য আবেদন করে দিবে।
আপনি চাইলে তাদের সাথে যোগাযোগ করে অস্ট্রেলিয়ায় কাজের ভিসা পাওয়ার জন্য আবেদন করতে পারেন। অথবা সরাসরি অস্ট্রেলিয়ান দূতাবাসে যোগাযোগ করে এ সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে পারেন। আপনি যদি অনলাইন বিষয়ে পারদর্শী হন তাহলে নিজে থেকে অস্ট্রেলিয়ার ওয়ার্ক পারমিট সরকারি ওয়েবসাইট গুলো ভিজিট করে, বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ায় কি কি কাজ অ্যাভেলেবেল আছে এ সম্পর্কে জানতে পারবেন।
আরো দেখুনঃ ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসা ২০২২
অস্ট্রেলিয়া কাজের ভিসা পাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা
বাংলাদেশে অনেক কুচক্রী দালাল আছে যারা আপনাকে বিভিন্ন ধরনের লোভ দেখিয়ে আপনার থেকে টাকা হাতিয়ে নিতে পারে। অস্ট্রেলিয়ায় কাজের ভিসা নিয়ে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। অনেক অবৈধ এজেন্সি আপনাকে অল্প টাকায় অস্ট্রেলিয়া নিয়ে যাবে, এমন অফার করে টাকা হাতিয়ে নিতে পারে।
ভিসা এবং পাসপোর্ট এর ক্ষেত্রে এই ধরনের সমস্যাগুলো বেশি হয়ে থাকে। তাই আপনি অস্ট্রেলিয়ান ভিসা পাওয়ার ক্ষেত্রে বা আবেদন করার ক্ষেত্রে অবশ্যই সর্তকতা অবলম্বন করবেন। এবং ভিসা হাতে পাওয়ার পরে অনলাইন থেকে এটিকে যাচাই করে নিবেন।